দুর্গাপূজো আসতে আর হাতেগোনা কয়েকটা মাত্র দিন বাকি। এরই মধ্যে রাজ্য সরকার যে রাজ্যের সমস্ত পুজো কমিটি গুলোকে 85 হাজার টাকা অনুদান হিসেবে দেওয়ার ঘোষণা করেছিল সেগুলি ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়ে গেছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গত 3-4 বছর থেকে এই টাকার পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়িয়েই চলেছেন। গত বছর এই পরিমাণ টা ছিল 70 হাজার এবং এবছর সেটা আরো 15 হাজার বৃদ্ধি করে করা হয়েছে 85 হাজার। এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম রাজ্য সরকারের প্রতি তির্যক মন্তব্য করেছেন। কলকাতা হাইকোর্টে এই পুজোর অনুদান নিয়ে জনস্বার্থের মামলা করা হয়েছে।
গত সোমবার সেই ঘটনার শুনানি তে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম রাজ্য সরকারকে ধিক্কার করে জানিয়েছেন যে, ’85 হাজার টাকায় কি আর পুজো হয়? রাজ্যের সমস্ত পূজা কমিটিগুলো 10 লক্ষ্য টাকা করে দিন। এই মামলার শুনানিটি হয়েছে প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি বিভাস পট্টনায়কের ডিভিশন বেঞ্চে। কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করার প্রধান কারণ হচ্ছে এই যে – পুজো কমিটি গুলোকে দেওয়ার জন্যে যে 85,000 টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে, এটা কোথা থেকে আসছে? ।
এর আগে বাংলার আরো একজন জনগণ সৌরভ দত্ত এই একই কেস নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের জনস্বার্থের মামলা করেছিলেন। সেই মামলাতেই নতুন করে আবেদন করা হয়েছে এখন। জনস্বার্থ মামলাতে প্রধান প্রশ্ন তোলা হয়েছে এখানে যে, এই 85,000 টাকার উৎস কোথায়? সমস্ত পূজা ক্লাবগুলি কি নির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে এই টাকা খরচ করছে কি না ? তার জন্যে।
প্রধান বিচারপতি সেদিন ওই শুনানিতে আরো বলেছেন যে, ’85 হাজার টাকাতে কি আর পূজো করা হয়, এটাতে খুব করে হলে একটা তাবু টাঙানো যাবে ভালো করে। আর না হলে কার্যকরী কমিটির সদস্যদের কাজে লাগতে পারে এই টাকাটা। আমি এর আগে গত দু’বছর ধরে ঘুরে দেখেছি সরকারের দেওয়া এই অনুদানের কিচ্ছু হয় না। অনুদানের টাকা কম করে 10 লক্ষ টাকা যদি করা হয়, তাহলে হয়তো সেটা দিয়ে পূজোর কাজ হতে পারে।
তিনি আবার এটাও বলেছেন যে “দুর্গা পূজা হচ্ছে রাতের ঐতিহ্য। সেই কারণে রাজ্যের সমস্ত পুজো কমিটিগুলোকে উৎসাহিত করার জন্য হয়তো রাজ্য সরকারের তরফ থেকে এই 85 হাজার টাকাটা দেওয়া হচ্ছে। সেখানে এই টাকা কোন কাজেই লাগে না। এখনো রাজ্যের এমন অনেক প্রত্যন্ত এলাকা রয়েছে, যেখানে হয়তো এই টাকা দিয়ে কিছু একটা হলেও হতে পারে? কিন্তু সেটা এখানে হবে না, আমি 100% গ্যারান্টি দিয়ে বলছি।”
এর আগে বিভিন্ন রকম দুরারোগ্য অসুখে আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে একটি মামলা করা হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলায় প্রধান অভিযোগ উঠেছিল এই বলে, আক্রান্ত শিশুর পরিবারের কাছে রাজ্য সরকারের দেওয়া স্বাস্থ্য সাথী কার্ড থাকলেও সেই কার্ডে কোনরকম টাকা দেওয়া হচ্ছে না। সেই শুনানিতে এই প্রশ্ন উঠে আছে আদালতেই। ওই শুনানিতে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছিলেন “দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত শিশুদের জন্য 10 হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। তাদের আরো বেশি প্রয়োজন। এই সামান্য টাকা দিয়ে কি আর ওই দুরারোগ্য ব্যাধি ঠিক হয়।