আর জি কর : এখন থেকে প্রায় কত পৌনে দু মাস আগে কলকাতার আরজিকর মেডিকেল কলেজে ঘটে গেছে সেই ভয়াবহ ও নৃশংস দুর্ঘটনা। যেই ঘটনার কেস এখন বর্তমানে CBI এর হাতে রয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার অধীনে কেসটি এখন সুপ্রিম কোর্টে বিচারানাধীন রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টও একের পর এক দিন ফেলেই যাচ্ছে এই দেশের সঠিক শুনানি দেবার জন্য।
গত 17ই সেপ্টেম্বর শ্রী মামলার শুনানি ছিল। আর ওই শুনানির দিনেই CBI তদন্তে বেশ কিছু বিস্ময় ঘটনা প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত ওদিন জানিয়েছে যে, CBI এর তদন্তের অগ্রগতি রিপোর্ট নাকি বেশ গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে রয়েছে। এমনকি প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বে বিচারপতি জেবি পাদ্রীওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিত্রের বেঞ্চ জানিয়েছিল যে, CBI আরো কয়েকটা দিন সময় দেওয়া প্রয়োজন। সর্বোচ্চ আদালতের এই মন্তব্যের পর আবারো কেটে গেছে 12টা দিন। রাজ্যসহ গোটা দেশ এখনো পর্যন্ত এই মামলার বিচারের দাবিতে উঠে পড়ে লেগে রয়েছে। কিন্তু সেখানেও এখন ঘনিয়ে এসেছে আচমকার মেঘ।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, দীর্ঘ জল গড়িয়ে যাবার পর সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়, বিচারপতি পাদ্রিওয়ালা এবং বিচারপতি মনোজ মিত্রের বেঞ্চে আরজিকর মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটা না হয়ে ঘটলে অন্য এক ঘটনা। এই মামলার শুনানিতে বাধা হয়ে রয়েছে অন্যান্য একাধিক বিচ্ছিন্ন মামলা। তেলেঙ্গানা মেডিকেল কলেজে ভর্তি সংক্রান্ত মামলায় ফরওয়ার্ডের কোটা সংক্রান্ত একাধিক মামলা সহ পাটনা হাইকোর্টের বিচারপতির বেতন সংক্রান্ত মামলাটি। হলে আরজিকরের এই মামলা শুনানি আরো পিছিয়ে যেতে পারে এমনটাই অনুমান করা হচ্ছে।
বিচারপতির বেতন প্রসঙ্গেও সুপ্রিম কোর্টের বিস্ময় প্রকাশ :
সূত্র অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, গত 17 সেপ্টেম্বর, সোমবার দুপুরের দিকে আরজিকর মামলা শুনানির আগেই ওখানে উপস্থিত বিচারপতির বেঞ্চের তরফ থেকে শুনতে চাওয়া হয়, পাটনা হাইকোর্টের বিচারপতির বেতন সংক্রান্ত মামলার বিবরণ। বিগত প্রায় 10 মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না এই বিচারপতি তারপরে মূলত আদালতের দ্বারস্থ হতে হয় ওনাকে। ওই বেতন সংক্রান্ত মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চে উঠতেই, বিগত মাস ধরে বেতন না পাওয়া ও বিচারপতির আইনজীবী জানান যে, ওই বিচারপতির General Provident Fund Account না থাকায় কাজে জয়েন করার পর একটা বেতনও তিনি পাননি।
আরও পড়ুন: আবারো এক গৃহবধূর শীলতাহানির অভিযোগ উঠল সিভিক ভলেন্টিয়ার এর বিরুদ্ধে
এরপরই বিচারপতির বেতন প্রসঙ্গে বিস্ময় প্রকাশ করে ডিওয়াই চন্দ্রচূড় এর কাছে আবেদন করে জানান যে, বকেয়া টাকা সহ সমস্ত বেতন বিচারপতি ফেরত দেওয়ার পাশাপাশি একটি অস্থায়ী জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড অ্যাকাউন্ট চালু করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দেওয়া হোক আমার মক্কেলকে। এই প্রসঙ্গে একটা কথা না বললেই নয় যে, উদিন পাটনা হাইকোর্টের বিচারপতির বেতন সংক্রান্ত মামলা ছাড়াও তেলেঙ্গানার মেডিকেল কলেজের কোটা সংক্রান্ত মামলাটিও আরজিকর মেডিকেল কলেজের মামলার শুনানির পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল।
সম্প্রতি তেলেঙ্গানার হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, তেলেঙ্গানা মেডিকেল কলেজের মোট সিটের মধ্যেই 85% সংরক্ষিত থাকবে স্থানীয় বাসিন্দাদের জন্য। তেলেঙ্গানা হাইকোর্টের এমন মন্তব্যের ফলে ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ওই মামলা উঠে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে। গত সোমবার আরজিকর মামলা শুনানির আগেই ওই মামলা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিচারপতির বেঞ্জ। মূলত এর ফলেই ওই দিনের শুনানি বেশ অনেকটাই পিছিয়ে গিয়েছিল। আমরা অবশ্যই চাইবো তিলোত্তমা যেন সঠিক বিচারপতি ও দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি হোক।