Manoj Mitra: আমাদের সবাইকে ছেড়ে চিরকালের মতো বিদায় নিলেন কিংবদন্তি নাট্যকার ও অভিনেতা শ্রী মনোজ মিত্র। মৃত্যুর সময় ওনার বয়স হয়েছিল 86 বছর। বাংলা সিনেমা কে তিনি তার অভিনয় দক্ষতার মাধ্যমে অনেক উঁচুতে নিয়ে গিয়েছিলেন এই কয়েক দশক সময় ধরে । আপাতত তিনি প্রয়াত হওয়ায় শোকস্তব্ধ হয়ে রয়েছে গোটা বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি। মঙ্গলবার সকালে বিদায় নিয়েছেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা সবাইয়ের কাছ থেকে। জানা গিয়েছে বেশ গত কয়েক মাস ধরেই অসুস্থ ছিলেন তিনি।
এমনকি গত সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ বেশ কয়েকবার তাকে হাসপাতালেও ভর্তি হতে হয়েছিল । কিন্তু তখন তিনি সুস্থভাবে আবারও বাড়িতে ফিরে এসেছিলেন, অসুস্থতাকে হারিয়ে দিয়ে। কিন্তু এবারে তিনি আর নিজের অসুস্থতাকে হারিয়ে সুস্থ হতে পারলেন না । এই নিয়ে এই কিংবদন্তি অভিনেতা মনোজ মিত্রের ভাই অমর মিত্র জানিয়েছেন যে, গত মঙ্গলবার অর্থাৎ 12ই নভেম্বর সকাল 8টা 50 মিনিট নাগাদ প্রয়াত হয়েছেন তিনি।
জানা গিয়েছে যে, মূলক ও বার্ধক্য জনিত চার্বিক অসুস্থতার কারণে তিনি কলকাতা হার্ট ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছিলেন, আর সেখানেই উনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। এই এত বড় মাপের কিংবদন্তি অভিনেতার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন স্বয়ং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, এই নিয়ে তিনি তার সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে পোস্টও করেছেন।
কিংবদন্তি অভিনেতা মনোজ মিত্রের ব্যক্তিগত জীবনের কিছু তথ্য :
মনোজ মিত্র, এই অভিনেতার নামটা শুনলেই মনে পড়ে যায় বাঞ্ছারামের বাগান, ঘরে বাইরে, শত্রু, চাঁদভাঙ্গা মধু ইত্যাদি সিনেমার বহু কালজয়ী চরিত্রের কথা। তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন পরাধীন ভারতবর্ষের সাতক্ষীরায়, 1938 সালের 22শে ডিসেম্বর। আর ওনার জন্ম ভিটে এখন বাংলাদেশের অধীনে রয়েছে।
সিনেমায় একাধিক বিবাহিত স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয়কারী টাবুর বাস্তব জীবনে কেন অবিবাহিত
সত্যজিৎ রায়ের সঙ্গেও অভিনয় করেছেন মনোজ মিত্র
তিনি তার পড়াশোনা সম্পূর্ণ করেছেন স্কটিশ চার্চ কলেজ, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। আবার বেশ কিছুদিন বিভিন্ন কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতাও করেছেন। তিনি প্রথমবার অভিনয় করেছিলেন কিংবদন্তি বাঙালি চলচ্চিত্র পরিচালক সত্যজিৎ রায়ের পথের পাঁচালী নাটকে একটা মঞ্চে 1957 সালে। আর সেই নাটক মঞ্চস্থ হয়েছিল ঠিক পরের বছর অর্থাৎ 1958 সালে। এই নাটকে তিনি অভিনয় করেছিলেন মূল চরিত্র অপুর বন্ধু প্রণবের চরিত্রে, আর অপুর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন পার্থপ্রতিম চৌধুরী।
চাঁদভাঙ্গা মধু নাটকের মধ্য দিয়ে খ্যাতি লাভ করেন মনোজ মিত্র
আর এই পার্থপ্রতিমের অনুপ্রেরণার ফলেই মনোজ মিত্রের লেখা 1959 সালে প্রথম নাটক তৈরি হয় ‘মৃত্যুর চোখে জল’ । আর ওনার লেখা এই নাটকটি মঞ্চস্থ হয়েছিল ওই বছরেই একদম শেষের দিকে। আর এই নাটক লেখার পরে তিনি একের পর এক প্রচুর কালজয়ী নাটকও লিখেছেন। তিনি মূলত সবার কাছে খ্যাতি লাভ করেছিলেন ‘চাঁদভাঙ্গা মধু’ নাটকটার মধ্যে দিয়ে। আর তারপর থেকে ধীরে ধীরে তিনি নাট্যকর থেকে অভিনেতা হওয়ার দিকে অগ্রসর হয়েছিলেন। তিনি উপহার দিয়েছেন আমাদের এই বাঙালি জাতিকে বহু কালজয়ী সিনেমা । এছাড়াও এই কিংবদন্তি অভিনেতার জড়িতে রয়েছে বহু দামি দামি সব পুরস্কার। তবে যাই হোক আমরা ওনার আত্মার শান্তি কামনা করি, তিনি যেখানেই থাকুক ভালো থাকুক, এটাই আমরা ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করব।