RG Kar: গত প্রায় 1 মাস আগে ঘটে যাওয়া আরজিকরের সেই নৃশংস কান্ড নিয়ে এখনো জ্বলছে বাংলা সহ গোটা দেশের মানুষ জন। এমনই অবস্থায় আবারও নিজের কর্মস্থলে কর্তব্যরত অবস্থায় আক্রান্ত হলেন এক সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক।
RG Kar: আর জি কর কাণ্ডের মধ্যে আবারও আক্রান্ত হলে সরকারি চিকিৎসক
মূলত রোগীর চিকিৎসা ও সেই রোগীকে অন্য আরো বড় হাসপাতালে রেফার করা নিয়ে রোগীর পরিবারের সঙ্গে চিকিৎসকের মুখোমুখি ঝামেলা শুরু হয় প্রথমে, পরে সেটা ধীরে ধীরে এমন এক পর্যায়ে চলে যায় যে রোগীর পরিবারের হাতে মূলত মার খেয়ে বসে ওই চিকিৎসক ডাক্তার।
পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুরের ঘটনায় আবারো চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নিউজ মাধ্যম সূত্রে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে যে, ডক্টর মিন্টু দে তার অন্যান্য দিনের মতোই রবিবার কাজলাগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিজের কাজ অর্থাৎ রোগীদের সেবা করছিলেন। ঠিক ওই সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়া এক ব্যক্তিকে তার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়রা ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসে।
আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবরা জানিয়েছে যে, বাজকুল রোডে বাইক দুর্ঘটনা ফলে ওই ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তির কাঁধে বেশ ভালো রকমের চোট লেগেছে। সেই মোতাবেক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছানোর মধ্যেই আহত ব্যক্তির প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয় ডাক্তারের দ্বারা।
আহত ব্যক্তিকে পরীক্ষা করে ডাক্তার জানতে পারে যে, ওই ব্যক্তির ‘Collar Bone’ ভেঙে গিয়েছে। যার চিকিৎসা করার মত উপযুক্ত পরিকাঠামো আপাতত ওই স্বার্থকেন্দ্রে নেই। যার ফলে আহত ব্যক্তিকে তমলুক জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেন ডঃ মিন্টু দে।
ডক্টর মিন্টু দে এই নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছে যে, যখন ওই আহত রোগীকে তমলুক জেলা হাসপাতাল রেফার করা হয় সেই ঘটনা শোনা মাত্রই ওই রোগীর আত্মীয় ও বন্ধুবান্ধবরা মূলত রেগে যান। রেগে গিয়ে তারা চিকিৎসকের কাছে জানতে চাই যে, ওই রোগীকে কেন অন্য হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে এবং কেনই বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রই তার সম্পন্ন চিকিৎসা করা হচ্ছে না ?
এই প্রশ্নের উত্তরে কর্তব্যরত চিকিৎসা ডক্টর মিন্টু দে জানাই যে, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যা চিকিৎসা পরিকাঠামো রয়েছে, সেই মতোই ওই রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে আপাতত। ওই রোগীর হাড় ভেঙ্গে গেছে, সেটা সারাতে তাদেরকে বড় হাসপাতালে যেতে হবেই। হাড়ভাঙ্গা সারানোর জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নেই।
কিন্তু আত্মীয়রা রোগীকে অন্যত্র নিয়ে যেতে আপত্তি করে? এই আপত্তি থেকেই ধীরে ধীরে শুরু হয় কথা কাটাকাটি এবং একসময় এই কথা কাটাকাটি এমন এক পর্যায়ে চলে যায় যে সেটা মূলত হাতাহাতি অর্থাৎ মারামারির রূপ নিয়েছিল। রোগীর আত্মীয় ও বন্ধুরা কর্তব্যরত ডক্টর মিন্টু দে কে অত্যন্ত অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং মারধর করে বলে অভিযোগ জানানো হয়েছে। যেটা ওই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে থাকা CCTV ক্যামেরাতে ধরা পড়েছে।
রোগীর আত্মীয় এবং বন্ধুদের হাতে আক্রান্ত চিকিৎসক এর পাশাপাশি আরও অভিযোগ করেছে যে, ওই ব্যক্তিরা মদ্যপান করেছিলেন। তারা চিকিৎসকের কোনো ভালো যুক্তিই তাদের কানে তোলেনি। এদিকে আবার এই ঘটনার খবর পেয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পৌঁছয় ভগবানপুর থানার পুলিশ অফিসার। ইতিমধ্যেই সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সম্প্রচারিত হতে নানামাহলে আবার রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের নিরাপত্তার ওপর নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে?
আরজিকর কাণ্ডের আবহে যেহেতু গোটা বাংলা জুড়ে এখন চিকিৎসকদের নিরাপত্তা দাবিতে সমাজের সকল স্তরের মানুষ রাস্তায় নেমেছে। তারা রাজ্য সরকারের কাছ থেকে বিচার চাইছে। কিন্তু এতগুলো দিন পার হয়ে যাওয়ার পরেও যে চিকিৎসকদের কোনরকম সুরক্ষার উন্নতি হয়নি সেটা এই ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয়ে যায়।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, আরজিকর কান্ডের নির্যাতিতার বিচার চেয়ে রবিবার পথে নেমেছে সমস্ত কলকাতা বাসী। শহরের নানা প্রান্তে চলছে নানারকম মিছিল, জমায়েত ইত্যাদি। এই সমস্ত কার্যকলাপে চিকিৎসক, নার্স , স্বাস্থ্য কর্মীরা তো অংশগ্রহণ করেছেন বটেই, এর পাশাপাশি এই সমস্ত কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করেছে এই সমাজের প্রায় সকল শ্রেণীর মানুষ। শুধুমাত্র রাজ্যে সরকারের পা চেটে বেড়ানো রাজ্য পুলিশ বাদে। এই এত কিছু দুর্নীতি ও খারাপ কার্যকলাপ যে দিনে দিনে রাজ্যটাকে একদম তলানিতে গিয়ে ফেলবে সে কথা বলাই বাহুল্য।
আমাদের এখন বর্তমান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, তথা পুলিশ মন্ত্রী, তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী যে এরাজের উন্নতি আর করতে পারবে না, সেটা ইতিমধ্যেই পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে। তিনি তার দায়িত্ব পালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছেন, এর জন্যেই রাজ্যের সমস্ত জনগণ সহ News Barta কর্তৃপক্ষ অবশ্যই চাইবে বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর পদত্যাগ হোক। তবেই হয়তো এর রাজ্যের উন্নতি হলেও হতে পারে।