RG Kar : কলকাতার আরজি কর মেডিকেল হসপিটালে জুনিয়র মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনা ঘটে গেছে আজ প্রায় দেড় মাস হতে গেল। কিন্তু এখনো পর্যন্ত CBI এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত আর জি কর মেডিকেল হসপিটালে প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ সহ তার দলবল কে কোনো রকম সঠিক শাস্তি দিতে পারল না। সেই ঘটনা এখন রয়েছে সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন।
অভয়া ধর্ষণকাণ্ডে নতুন আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার
সুপ্রিম কোর্টও একের পর এক দিন ফেলেই যাচ্ছে এই কেসের শুনানি নিয়ে। আগামী সোমবার এই কেসের পরবর্তী শুনানি রয়েছে। তার আগেই অভয়ার বাবা মা তাদের আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের কেসটা তুলে নিয়ে তার পরিবর্তে আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভারের হাতে এই কেসটা তুলে দিলেন। এই নতুন আইনজীবী জানিয়েছেন, তিনি তিলোত্তমার ন্যায় বিচারের জন্য সম্পন্ন বিনা পারিশ্রমিকে এই কেস লড়বেন।
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই বিখ্যাত আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার নিচের কর্মজীবনে এখনো পর্যন্ত একাধিক এরকমই হেভিওয়েট কেস লড়েছেন, এবং সেটা জিতেছেনও। যেমন ধরুন 1987 সালের হাশিমপুরা পুলিশ হত্যা মামলা থেকে শুরু করে 2004 সালের ইসরাত জাহান মামলা, 2008 সালের কাঁধা মালিক খ্রিস্টান বিরোধী দাঙ্গা মামলা ইত্যাদি একাধিক হেভিওয়েট কেস লড়েছেন আইনজীবী। আরজি করের এই কেসটা হাতে নেওয়ার আগেও তিনি শিশুদের উপর নির্যাতন এবং মানবাধিকার এর জন্য একাধিক কেস লড়েছেন। সুতরাং মনে করা হচ্ছে যে, এই অভিজ্ঞ, দাপুটে ও ন্যায়ের পথে চলা আইনজীবী বৃন্দা গ্রোভার যে এই কাজটা নিয়ে কোনো রকম ভুল করেননি সেটা তিনি প্রমাণ করে দেবেনই।
তিনি জানিয়েছেন আর জি কর এর এই কেসটা লড়ার জন্য তিলে তোমার পরিবারের কাছ থেকে এক টাকাও পারিশ্রমিক নেবেন না তিনি। সম্পূর্ণ বিনামূল্যে তিনি এই কেসটা লড়বেন। তার এই সিদ্ধান্তকে নিউজ বার্তা এর কর্তৃপক্ষ সাধুবাদ জানাই।
আরও পড়ুন: প্রাণপণ চেষ্টা করেও পৃথিবীতে ফিরতে পারছেন না সুনিতা উইলিয়ামস
এই শিরোনামে আর একজনের নাম না বললেই নয় তিনি হলেন আইনজীবী হারিস সালভে। যিনি কিনা মাত্র এক টাকা পারিশ্রমিক নিয়ে অনেক কঠিন কেস লড়াই করেন। তিনি হলেন দেশের প্রাক্তন সলিসিটর জেনারেল। এখনো পর্যন্ত আম্বানি, মিওল সহ দেশের তাবড় তাবড় ব্যক্তি রা এই আইনজীবীর দারস্ত হয়ে থাকেন বিভিন্ন রকম কেসের জন্য। সুতরাং এই থেকেই বোঝা যাচ্ছে যে তিনি কোন মাপের আইনজীবী। এর আগে তিনি 1 টাকা পারিশ্রমিক নিয়ে কুলভূষণ যাদবের মামলা লড়েছিলেন। সন্দেহ করে পাকিস্থানের আদালত কলভুষণ যাদব কে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। কিন্তু তিনি তার নিজের দক্ষতা দিয়ে ওই কেসটা লড়ে কূলভূষণকে মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন।
যে কোন পেশাতেই অবশ্যই অভিজ্ঞ এবং দক্ষ মানুষদের কদর সবসময় বেশি হয়, এটা চিরন্তন সত্য। আইনজীবীদের ক্ষেত্রেও এর কোনো ব্যাঘাত ঘটবে না। মূলত বর্তমান সমাজে যে আইনজীবী যত দক্ষ এবং অভিজ্ঞ, তার পারিশ্রমিক এর সংখ্যাটা অন্যান্য আইনজীবী থেকে ততটাই বেশি। কিন্তু সে দিক থেকে বৃন্দা গ্রোভার, হরিশ সালভে হলেও এদের মধ্যে ব্যতিক্রম, তাদের কাছে নিজের পারিশ্রমিকটা বড় নয়। সবসময়ই সত্যের পথে নিজের পেশাটাকে এগিয়ে নিয়ে গেছেন।
যেখানে এই আরজিকর মামলায় অভিযুক্তদের বাঁচানোর জন্য রাজ্য সরকারের তরফ থেকে বেশ অনেকগুলো আইনজীবীকে রাখা হয়েছিল প্রচুর পরিমাণ পারিশ্রমিক দিয়ে, সেদিকে এই দুজন সৎ মনোভাবাপন্ন আইনজীবী বিনা পারিশ্রমিকে অথবা অতিকম পারিশ্রমিকে সঠিক বিচার পাইয়ে দেওয়ার জন্য সত্যের পথে লড়ে যান। তাদেরকে অবশ্যই কুর্নিশ জানিয়েছে অনেকেই।