অত্যন্ত কম বয়সে এই গানের জগতে হাত করে দিয়েছিলেন সংগীতশিল্পী সুষমা শ্রেষ্ঠা। গত পাঁচ দশক ধরে বলিপাড়ার সঙ্গে যোগাযোগ তার। ক্যারিয়ারের জন্য নিজের নামও বদলাতে হয়েছিল তাকে। এক সময়ে প্রথম শাড়ির গায়িকা কোথাও উধাও হয়ে গেলেন ?
কে এই সংগীত শিল্পী সুষমা শ্রেষ্ঠা
প্রায় 6 দশক আগে 1960 সালে মুম্বাইয়ে এক নেপালি পরিবারের জন্মগ্রহণ করেন সুষমা শ্রেষ্ঠা। তার পিতা ভোলানাথ শ্রেষ্ঠা ছিলেন পেশায় একজন সংগীত নির্মাতা। ৫০ এবং ৬০ দশকে বিভিন্ন নামকরা সংগীত পরিচালকদের সঙ্গে কাজও করেছিলেন তিনি। তার পিতার জন্যেই একদম শৈশব থেকেই সংগীত জগতের সঙ্গে পরিচিতি ঘটেছিল সুষমার। যেহেতু একজন ছোট থেকেই তিনি সংগীত জগতের সঙ্গে জড়িত হয়ে গিয়েছিলেন, ফলে খুব কম বয়সেই তার গানের প্রতি ভালোবাসাও জন্মেছিল।
ভারতবর্ষের অন্যতম একজন সঙ্গীত শিল্পী শ্রীমতি আশা ভোঁসলের কাছের বান্ধবীও ছিলেন তিনি। শোনা যায় সুষমা যখন ছোট ছিলেন তখন তাকে কোলে বসিয়ে গান শোনাতেন আশা ভোঁসলে। ধলিপাড়ার সঙ্গী জগতের সঙ্গে যোগাযোগ থাকার সুবাদে ভোলানাথ শ্রেষ্ঠা তার কন্যা সুষমক রেষ্ট কে গান করার অনুমতি দিয়েছিলেন। সুষমার যখন বয়স ছিল মাত্র 9 বছর, তখন অর্থাৎ 1971 সাল নাগাদ তিনি ‘আন্দাজ’ নাম এক এক হিন্দি ছবিতে গান করার সুযোগ পেয়েছিলেন। যেই ছবিতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন রাজেশ খান্না, হেমা মালিনী, শমী কাপুর আরো বিখ্যাত বিখ্যাত অভিনেতারা। ওই ছবির ‘है ना बोलो बोलो’ গানটাতে তিনি কণ্ঠ দিয়েছিলেন। সুষমা শ্রেষ্ঠার কেরিয়ারের প্রথম এই গানটি অত্যন্ত হিট করেছিল।
কিভাবে সংগীত জগতে যাত্রা শুরু হয়েছিল সুষমা শ্রেষ্ঠার
শুধুমাত্র বাবার ইচ্ছা পূরণ করবেন বলে মন যে পারফর্ম ও করেন তখন তিনি। তার গান শুনে মুগ্ধ হয়ে পড়ে বলিউডের সমস্ত বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী সহ আরো অন্যান্য উচ্চপদস্থ ব্যক্তিবর্গরা। একের পর এক প্রস্তাব পেতে শুরু করেন তিনি। শিশুদের জন্য তৈরি করা একটি গ্রামের গান গাওয়ার সুযোগ পান সুষমা। সেই অ্যালবামে মোট চারটি গান করেছিলেন তিনি। হিন্দির পাশাপাশি মারাঠি ভাষার গানও খুব নৈপুণ্যের সঙ্গে গাইতেন তিনি। যার ফলে তৎকালীন সংগীত পরিচালক রাহুল দেববর্ম নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন সুষমা। ‘जाने तु या जाने ना’, ‘क्या हुआ तेरा वादा’ , ‘ठंडे-ठंडे पानी से नहाना चाहिए ‘ , ‘ तेरी है जमीन तेरा आसमान ‘ এর মত হিট করা গানও গিয়েছিলেন সুষমা শ্রেষ্ঠা ।
আরও পড়ুন: মারা গেলেন বিখ্যাত অভিনেতা দেবরাজ রায়
তারপরে আশির দশকে তিনি বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। সে কারণে গানের জগৎ থেকে ও দূরত্ব তৈরি হয়ে যায় তার ধীরে ধীরে। পরে আবারো সংগীত জগতে ফিরে আছেন তিনি। ক্যারিয়ারের জন্য নাম পরিবর্তন করে তিনি তার নতুন নাম রাখেন পূর্ণিমা। ৯০ এর দশক থেকে সুষমার ক্যারিয়ারের লেখচিত্র ঝড়ের গতিতে উপরের দিকে উঠতে শুরু করে। বলিউডের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ছবি নির্মাতা ডেভিড ধাওয়ান এর একের পর এক ছবিতে গান গেয়ে তিনি অত্যন্ত শিক্ষার্থী অর্জন করেন। ‘बोल राधा बोल’, ‘चमत्कार’, ‘अंजाम’, राजा बाबू’, ‘गोपी किशन’, ‘साजन चले ससुराल’, दिलजले’, ‘इना मीना डीका’, ‘बेताल बादशा’, ‘जुड़वा’, ‘कूली नंबर 1’, ‘हीरो नंबर 1’ সহ আরো একাধিক ছবির বিভিন্ন গানে তিনি তার কণ্ঠ দিয়েছেন।
অলকা ইয়াগনিক এর সঙ্গেও গান গেয়েছেন সুষমা শ্রেষ্ঠা
Alka Yagnik এবং Kavita Krishnamurthy এর সমসাময়িক গায়িকা ছিলেন তিনি। ৯০ এর দশকে জয়া প্রদা, শ্রীদেবী, মাধুরী দীক্ষত, কাজল, রানী মুখার্জী, মনীষা কৈরালা, সিমি গারেওয়াল, তব্বু, শিল্পা শেট্টি, করিসমা কাপুর, জুহি চাওলা তো আরও প্রচুর বলিউড অভিনেত্রীদের কন্ঠ দিয়েছেন তিনি। একসময় বলিউডে চুটিয়ে কাজ করেছেন সুষমা শ্রেষ্ঠা । কিন্তু ধীরে ধীরে কাজ পাওয়া বন্ধ হয়ে যেতে থাকে তার। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মঞ্চে পারফর্ম করে উপার্জন করে সংসার চলতে সুষামার। গানের দু একটি Reality Show তেও বিচারকের আসনে দেখা গিয়েছিল তাকে। কিন্তু বর্তমানে সংগীত জগৎ থেকে বেশ অনেকটাই দূরে চলে গিয়েছেন এই বিখ্যাত সংগীত শিল্পী সুষমা শ্রেষ্ঠা ।