বাজেটে ঘাটতি প্রায় 2 লক্ষ কোটি ডলারের। হলে আর্থিক সংকট মেটাতে লড়াই আমেরিকার

বিশ্বের সবথেকে উন্নত মানের দেশ আমেরিকার অর্থনীতিতে পড়েছে শনির দশা। বেড়েই চলেছে আর্থিক ঘাটতি । 1 লক্ষ 88 হাজার কোটি ডলার গিয়ে পৌঁছেছে।

বাজেটে ঘাটতি প্রায় 2 লক্ষ কোটি ডলারের। হলে আর্থিক সংকট মেটাতে লড়াই আমেরিকার
Published On:

বিশ্বের সবথেকে উন্নত মানের দেশ আমেরিকার অর্থনীতিতে বর্তমানে পড়েছে শনির দশা। দিন দিন বেড়েই চলেছে আর্থিক ঘাটতি ওদেশের। চলতি আর্থিক বছরে প্রায় 1 লক্ষ 88 হাজার কোটি ডলার গিয়ে পৌঁছেছে। জানা গেছে কোভিডের পর বাজেট ঘাটতি সর্বোচ্চ স্তরে চলছে বর্তমানে। এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশ্বের তাবড় তাবড় অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞেরা । এর পরোক্ষ প্রভাব অন্যান্য দেশসহ ভারতের উপরেও পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। আর্থিক ঘাটতির পাশাপাশি আমেরিকায় পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলেছে সুদের হার।

ওয়াশিংটনে Federal Bank এ সুদের পরিমাণ এক লক্ষ কোটি ডলার ছাড়াল

আমেরিকার ওয়াশিংটনের কেন্দ্রীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান হল Federal Bank । যার ঋণের উপর সুদের পরিমাণ প্রথম বারের জন্য 1 লক্ষ কোটি ডলার ছাড়িয়ে দিয়েছে। এর পাশাপাশি আবার, বিভিন্ন সামাজিক সুরক্ষামূলক প্রকল্প, অবসরকালীন নানা রকম ভাতা, স্বাস্থ্য এবং সেনাবাহিনীর খরচ বৃদ্ধি সমেত আরো অনেক দিকে খরচা বেড়েছে। বলে জানিয়েছে আমেরিকার ট্রেজারি বিভাগ। ট্রেজারি বিভাগ সম্পর্কে পাওয়া খবর অনুযায়ী, চলতি বছরের 30 বাজেট ঘাটতির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় 8% । যা প্রায় 13 হাজার 800 কোটি ডলার। গত আর্থিক বছরে বাজেট ঘাটতির অংক পৌঁছেছিল 1 লক্ষ 69 হাজার কোটি ডলারে। এবার যে সেই সীমা ছাড়িয়ে যাবে, সেটা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।

করোনা মহামারী শুরু হওয়ার পর থেকে এতদিন পর্যন্ত 2023 আর্থিক বছরে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ ছিল তৃতীয় সর্বোচ্চ। 2020 আর্থিক বছরে ঘাটতির অংক ছিল সর্বাধিক। যা 3 লক্ষ 13 হাজার কোটি ডলারে পৌঁছেছিল। 2021 আর তিন বছরে এই ঘাটতি নেমে এসেছে 2 লক্ষ 77 হাজার কোটি ডলারে। যেটা ছিল দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। 2023 আর্থিক বছরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের চালু করা ‘পড়ুয়া ঋণ’ এর কর্মসূচি বাতিল করে আমেরিকার কোর্ট। যার জেরে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ 33 হাজার কোটি ডলার মত কমে যায়। ওই অংকে টাকা খরচ করা হলে ঘাটতির অংক আবারও একবার 2 লক্ষ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেত বলে মনে করা হচ্ছে। 2024 আর ঠিক বছরের বাজেট আমেরিকার দেশজ্য উৎপাদনের ঘাটতি 6.4% গিয়ে দাঁড়িয়েছে। 2023 আর্থিক বছরে যেটা ছিল প্রায় 6.2% । আগামী 5ই নভেম্বর থেকে আটলান্টিকের পাড়ের দেশটিতে শুরু হবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী ভোট। সেই ভোটের প্রচারে বাজেট ঘাটতি একটা বড় সমস্যা হিসেবে দেখা দিচ্ছে।

ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস

এবারের নির্বাচনী ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। অন্যদিকে প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আবারো প্রার্থী হিসেবে দাড় করিয়েছেন আমেরিকান রিপাবলিকান পার্টি। আর্থিক বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি অনুযায়ী, বাজেটের ঘাটতি ট্রাম্পের চেয়ে হ্যারিস বেশি ভালো সামলাতে পারবেন। আমেরিকার আর্থিক বিশেষজ্ঞদের সংস্থা Committee of a Responsible Federal বাজেট এর দাবি যে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে বাজেট ঘাটতি মেটাতে নতুন করে 7 লক্ষ 50 হাজার কোটি ডলার ঋণ নিতে হবে তাদের। অন্যদিকে আবার প্রেসিডেন্টের চেয়ারে বসলে 3 লক্ষ 50 হাজার কোটি ডলার ঋণ নিতে পারেন হ্যারিস। হঠাৎ রিপাবলিকান পার্টি নেওয়ার ঋণের অংক তার প্রতিদ্বন্দ্বী তুলনায় দ্বিগুণের বেশি হবে বলে মনে করছেন ওদেশের সমস্ত অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা।

দাঁত ভেঙে দিয়ে ও তর্জনী কেটে দিয়ে সিনওয়ারের মৃত্যু নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ছিল ইজরাইল

2024 ৮০ বছরে কর বাবদ রেকর্ড অর্থ এসেছে আমেরিকার কোষাগারে। কিন্তু ট্রেজারি বিভাগের দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী যা প্রায় 4 লক্ষ 91 হাজার কোটি ডলার। 2023 অর্থের তুলনায় 47 হাজার 900 কোটি ডলার এসেছে সরকারের কাছে। গত এক বছরে আমেরিকার ব্যক্তিগত ও কর্পোরেট কর সংগ্রহের পরিমাণ বেড়েছে। যার ফলে কোষাগারে অতিরিক্ত টাকা এসেছে। অন্যদিকে আবার 2024 আর তিন বছরে আমেরিকার সরকারের খরচ বেড়েছে প্রায় 10% । হঠাৎ সরকারি ব্যয় 61 হাজার 700 কোটি ডলার থেকে বেড়ে 6 লক্ষ 75 হাজার কোটি ডলারে পৌঁছে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।

এই পরিস্থিতিতে এই সামান্য খুশির খবর শুনিয়েছেন ট্রেজারি বিভাগের এক পদস্থ অধিকারীক। তিনি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, ‘ফেডারেল ঋণের সুদের খরচ ধীরে ধীরে কমতে শুরু করেছে। 2022 সালের জানুয়ারির পর এ বছরের সেপ্টেম্বরে প্রথমবার সেই প্রবণতা দেখা দিয়েছে। এটি আবার কমতে পারে বলে আশা প্রকাশও করা যাচ্ছে। ঘাটতি ও উদ্বৃত্তের পরিসংখ্যান দিতে গিয়ে আমেরিকান সরকার গত সেপ্টেম্বর মাসের উদাহরণ দিয়েছে।

এবছরের উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে 6 হাজার 400 কোটি ডলার

এবছরের সেপ্টেম্বর মাসে উদ্বৃত্তের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে 6 হাজার 400 কোটি ডলার। অন্যদিকে আবার গত বছরে সেপ্টেম্বর মাসে ঘাটতির পরিমাণ ছিল 17 লক্ষ 100 কোটি ডলার। আমেরিকান বিশেষজ্ঞদের দাবি, b মূলত ক্যালেন্ডার সমন্বয়ের ফলে এই উন্নতি দেখা দিয়েছে। জানা থাকলে 2024 আর তিন বছরে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াতো প্রায় 1600 কোটি ডলার। গত সেপ্টেম্বর মাসে কর বাবু আমেরিকার কোষাগারে এসেছে 52 হাজার 800 কোটি ডলার। 2023 সালের সেপ্টেম্বরে তুলনায় যা 13% বেশি। অন্যদিকে এই মাসে খরচে অ 46 হাজার 300 কোটি টাকায় পৌঁছেছে। ক্যালেন্ডার সমন্বয়ে জেরে এতে 27% পতন দেখা দিয়েছে।

Budget 2024 West Bengal, international

Leave a Comment