The Bong Guy : ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে দিয়ে শুরু করেছিলেন ইউটিউব। তখন সবাই ওকে নিয়ে ঠাট্টা তামাশা করে বলতো, এইসব করে কিচ্ছু হবে না। ইঞ্জিনিয়ারিং করলে হয়তো চাকরি বাকরি করে ভালো দিন কাটাতে পারত। কিন্তু সেই সময় কেইবা জানত যে, এই ছেলেই হয়ে উঠবে একদিন বাংলার এক নম্বর ইউটিউবার।
এখানে কথা হচ্ছে on and only The Bong Guy তথা কিরণ দত্তের। তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং ছেড়ে দিয়ে 2015 সালে ইউটিউবে রোস্ট ভিডিও বানাতে শুরু করেছিলেন। তখন সবাই ওকে খুব খারাপ বলতো, কেননা ও সাধারণ মানুষদের নিয়ে রোস্টিং করে। কিন্তু এই মুহূর্তে ওই ব্যক্তিরই ইউটিউবে সাবস্ক্রাইবার হলেও 4.08 মিলিয়ন।
কিন্তু এই কিরণ দত্তই কিছু মাস আগে ঘটে যাওয়া কলকাতার আরজি করে ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে প্রচুর প্রতিবাদ করেছেন। মূলত তারপর থেকে সোশ্যাল মিডিয়ার চোখে বাস্তবে হিরোতে পরিণত হয়েছে রোস্টার কিরণ দত্ত তথা বং গাই । এবার তিনি পেলেন এক নতুন প্রাপ্তি তার জীবনে। কেননা ফোর্বসের তালিকায় নাম উঠে গেল কিরনের। যেটা দেখেই কিরন নিজেই বিশ্বাস করতে পারছেন না। দেশের সেরা 100 জন কনটেন্ট ক্রিয়েটারদের মধ্যে 10 নম্বরে জায়গা করে নিয়েছে বাংলার এই কনটেন্ট ক্রিয়েটর তথা ইউটিউবার।
ছোটবেলার এক স্যারের কাছে অপমানিত হয়েছিল কিরণ, সেই স্যার কেই খুঁজছেন বং গাই
মাত্র 29 বছর বয়সী বং গাই এর প্রতি ভিডিওর গড় ভিউ হল বর্তমানে 18 লক্ষেরও বেশি। সেই সময় নিউজ আর্টিকেলের স্ক্রিনশট নিজের ইনস্টাগ্রাম এ শেয়ার করে কিরণ ক্যাপশনে লিখেছিলেন যে – ‘বাপের জন্মে কল্পনাও করিনি যে ফোর্বসে নিজের ছবি দেখতে পাবো …… আর দেশের সেরা 100 জন ডিজিটাল সোশ্যাল মিডিয়া ক্রিটারদের মধ্যে আমার নাম 10 নম্বরে থাকবে। আজ আমার এক ছোটবেলার শিক্ষকের কথা খুব মনে পড়ছে। তিনি আমাকে বলেছিলেন আমি নাকি জীবনে কিচ্ছু করতে পারবো না। আর ওই দিন শিক্ষকের ওই কথাটা শুনে আমি এতটাই মন থেকে ভেঙে গিয়েছিলাম যে বাড়ি এসে আমি 1000 বার লিখেছিলাম – “আমি পারবো”, এর সঙ্গে খুব হাউমাউ করে কেঁদেছিলাম। কেননা সে আর আমাকে মেয়েদের সামনে অপমান করেছিল। তবে কেন আজ হঠাৎ মনে পড়ল তা জানিনা। কিন্তু এসবের মধ্যে আমার ভেতরে শিশু মনটা চিৎকার করে বলতে চাইছে – পারলাম তো? ভাইদের জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। বড় স্বপ্ন দেখো, আমার মত সাধারন একজনের পূরণ হতে পারলে তোমাদের সবারও অবশ্যই হবে।’
আরও পড়ুন: পরের আইপিএলে ধোনি কি আদৌ CSK এর হয়ে খেলবে
কিভাবে জার্নি শুরু করেছিল কিরণ দত্ত
এখন থেকে 9 বছর আগে 2015 সালে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করতে করতে ইউটিউবে 2টো ভিডিও বানিয়ে আপলোড করেছিলেন কিরণ। তারপর প্রায় 2 বছর পরে সবার নজরে আসেন এই কিরণ দত্ত। এই ছেলেটা যেদিন ইউটিউব চ্যানেল খুলেছিলেন, প্রতিদিন বাংলায় ইউটিউবারের সংখ্যা প্রায় ছিল না বললেই চলে। আর যদিও বা থাকে সেটা খুবই নগণ্য। নিজের চ্যানেলকে প্রতিষ্ঠিত করতে সেই সময় দিন রাত এক করে অত্যন্ত পরিশ্রম করেছিলেন তিনি। চ্যানেলের ভিডিওর জন্য স্ক্রিপ্ট লেখা, ভিডিও বানানো, এডিট করা, ও চ্যানেলে আপলোড করা সমস্ত কাজই তিনি একা হাতে করতেন তখন।
এরপর ‘এ কেমন সিনেমা’ ফ্রিজ দিয়ে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে যান বং গাই। যেখানে মূলত পুরনো বাংলা ছবির রোস্ট ভিডিও বানান কিরণ। হিরনের এই অভূতপূর্ব সাফল্যে গোটা দেশ আজ গর্বিত । তবে সবচেয়ে আপ্লুত তার বান্ধবী অন্তরা অর্থাৎ আলু দ্য ফ্রেঞ্চ ফ্রাই। কিরণের উদ্দেশ্যে তার বান্ধবী অন্তরা লিখেছেন যে – তুমি সব সময় আমাদের অনুপ্রাণিত করো, অসংখ্য ধন্যবাদ আমার ভালোবাসা’।
দাদাগিরিতে এসে মাসিক ইনকামও বলে কিরণ
কিরণ একবার বাংলার বিখ্যাত রিয়ালিটি শো দাদাগিরিতে এসে তার মাসিক ইনকামের ছোট্ট একটা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। সেটা দেখে মূলত খোদ সৌরভ গাঙ্গুলী ছানাবড়া হয়ে গিয়েছিল। তখন দাদা বলেছিলেন, ‘তো মাস গেলে ভালোই রোজগার হয়তো, প্রায় 10 থেকে 12 লক্ষ্য। ওই প্রশ্নের উত্তরে কিরণ বলেছিলেন আমি আমার ইনকামের কথা বলতে পারব না। তবে সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হলে আমি যে টাকা ইনকাম করতাম তার থেকে অনেক গুণ বেশি টাকা ইনকাম করি আমি এই পেশাতে এসে।